South east bank ad

মাদারীপুরে পরকীয়ার অভিযোগে ১০০ জুতাপেটা

 প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   সারাদেশ

মাদারীপুরে পরকীয়ার অভিযোগে ১০০ জুতাপেটা

এস এম আরাফাত হাসান (মাদারীপুর):

মাদারীপুরে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে প্রহসনমূলক সালিস বসিয়ে নারী-পুরুষকে ১০০ জুতাপেটা করেছে প্রভাবশালী একটি মহল। পরে তাদের জুতার মালা পরিয়ে এলাকা ঘুরিয়ে সমাজচ্যুত করে ঘরে তালা ঝুলিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের সুতারকান্দি গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। মাতবরদের ভয়ে বিষয়টি প্রথমে গোপন রাখা হলেও মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) লোকমুখে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়রা জানান, মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর গ্রামের মনির মিয়ার (৪০) সঙ্গে রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের সুতারকান্দি গ্রামের ছাবেদালী ফকিরের স্ত্রী খোদেজা বেগমের (৫০) ধর্মীয়ভাবে আত্মীয়তা রয়েছে। তারা ধর্ম ভাই-বোন হিসেবে উভয়ের বাড়ি যাতায়াত ছিল। আত্মীয়তা সূত্রে ধরে গত সোমবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে মনির মিয়া তার বোন খোদেজা বেগমের বাড়ি বেড়াতে আসেন। কিছুক্ষণ পরেই একই বাড়ির কালু ফকির, ইমরান ফকির, শাকিব আকন, রানা ফকির, শামীম ফকিরসহ ৮ থেকে ১০ জন খোদেজা ও মনিরকে ঘর থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে বাইরে আনে। পরে খোদেজা ও মনিরকে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে। একপর্যায়ে বাড়ির উঠানে প্রকাশ্য দিবালোকে প্রহসনের সালিস বসায় অভিযুক্ত ৮ থেকে ১০ জন।

সালিসে কালু ফকিরের নেতৃত্বে কারো বক্তব্য না শুনেই খোদেজা ও মনিরকে ১০০ জুতাপেটা করা হয়। পরে তাদের জুতার মালা পরিয়ে পুরো এলাকা ঘোরানো হয়। একপর্যায়ে তাদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে এলাকা থেকে বের করার রায় ও সমাজচ্যুত করা হয়।
বিষয়টি অমানবিক ও ন্যক্কারজনক এ ঘটনায় হিসেবে বলছেন স্থানীয়রা। প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে না পারলেও বিষয়টি পরে জানাজানি হয়।
রাজৈর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সাদী জানান, এ ঘটনায় ২৪ এপ্রিল শনিবার রাতে শালিসের প্রধান হোতা কালু ফকির, ইমরান ফকির, শামীম ফকিরসহ ৭ জনের উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০ জনের নামে রাজৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগীর স্বামী। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধান সালিশ কালু ফকির, আজিজুল ফকির ও শাকিব আকনকে গ্রেফতার করে মাদারীপুর জেল হাজতে পাঠিয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিসুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। মানবধিকার লঙ্ঘনের শামিল। আমার কাছে ওই নারী এসেছিল এবং একটি অভিযোগ দিয়েছিল। আমি সাথে সাথে থানাকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি।

BBS cable ad

সারাদেশ এর আরও খবর: