South east bank ad

আজাদ প্রোডাক্টস এর মালিক আবুল কালাম আজাদ এর জন্মদিন আজ

 প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   জন্মদিন

শূন্য থেকে শিখরে উঠে আসা স্বমহিমায় উদ্ভাসিত কর্মসফল দৃঢ়প্রত্যয়ী ব্যক্তিত্ব মো. আবুল কালাম আজাদ এর জন্মদিন আজ । সততা, বুদ্ধি আর পরিশ্রম তাঁকে আজকের অবস্থান নিয়ে এসেছে। এল রহমান জুয়েলার্স এর খাম্বার সামনে বিক্রি করা শুরু করলেন দেশ বিদেশের সিনেমার নায়ক নায়িকাদের পোস্টার। ছোট পুঁজি নিয়ে ব্যবসা করতে করতে গড়ে তুললেন ‘আজাদ প্রোডাক্টস’।

শূন্য থেকে উঠে আসা এই শিল্পপতি ১৯৫৪ সালের ২০শে সেপ্টেম্বর জন্ম নেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার শ্রীকালিয়া মুন্সিবাড়ি গ্রামে। পরে পিতার চাকরির সুবাদে শরীয়তপুর জেলার ডামুঢ্যা উপজেলার বায়েশ্বর গ্রামে চলে যান। সেখানেই তার বেড়ে ওঠা।

১৯৭৬-৭৭ সালের কথা। বিটিভিতে প্রচারিত সিক্স মিলিয়ন ডলারম্যান সিরিজের জনপ্রিয়তা তখন তুঙ্গে। হু হু করে বিক্রি হয়ে যেত সিরিজের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ভিউকার্ড আর পোস্টার। তখন তিনি ভাবলেন বিদেশি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মতো দেশীয় অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও অনেকেরই তো জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। এদের পোস্টার, ডিউকার্ডও বিক্রি হবে নিশ্চয়। ওই সময় রাজ্জাক, আফজাল, সুবর্ণা ছিল খুবই জনপ্রিয় স্টার। এদের পোস্টার, ভিউকার্ড বানানো গেলে ভক্তরা নিশ্চয় কিনবে, ওই সময় বিটিভির জনপ্রিয় সাপ্তাহিক সকাল-সন্ধ্যা তখন আলোচনার শীর্ষবিন্দুতে। পীয়ূষ-আফরোজা জুটিও জনপ্রিয়। কিন্তু কই পাবেন তাদের ছবি? কিভাবে পাওয়া সম্ভব- সে ব্যাপারে গ্রাম থেকে আসা আজাদের কোন ধারণাই ছিল না। একদিন ফুটপাতে ‘তারকালোক’ পত্রিকার প্রচ্ছদে পীষূষ-আফরোজার ছবি দেখলেন। পত্রিকাটি উল্টে পাল্টে দেখলেন ভেতরে আফজাল, সুবর্ণা, রাজ্জাক পরিবারের ছবি। কিন্তু একজন ফুটপাতের ব্যবসায়ী হিসেবে তাদের কাছে পৌঁছতে কি পারবেন- এমন শঙ্কা তাকে ঘিরে ফেললো। কিন্তু তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যেভাবেই হোক তাদের কাছে পৌঁছতেই হবে। পত্রিকা থেকে ঠিকানা নিয়ে ছুটে গেলেন নীলক্ষেতে ‘তারকালোক’ অফিসে। মালিক অফিসে ছিলেন না। ওই সময় অফিসে ছিলেন সাযযাদ কাদির। তিনি তার পরিকল্পনার কথা বলতেই বললেন আপনার উদ্যোগ ভাল। আজাদ বলেন, সাযযাদ কাদির ছিলেন খুবই ভাল মানুষ। তিনি বললেন এটি মালিকের এখতিয়ারে। পরে মালিক আরেফিন বাদলের কথা মতো মাঝি ভাই পীযূষ-আফরোজা, আফজাল-সুর্বণা ও রাজ্জাক পরিবারের ছবি দিলেন। এরপর ব্যাংককে পৌঁছে পোস্টার বিক্রির জায়গাটা খুঁজে বের করলেন। দেখলেন ঢাকায় যে পোস্টার ১২ টাকা দিয়ে কিনতেন। সেটা ব্যাংককে মাত্র ২ টাকা। সবমিলিয়ে ঢাকায় আনতে পোস্টার প্রতি খরচ ৬ টাকা। শুরু হলো ব্যাংকক থেকে পোস্টার এনে বিক্রি করা।এদিকে সকাল-সন্ধ্যার জনপ্রিয় জুটি আফরোজা বানু ও পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি, নায়করাজ রাজ্জাকের পরিবার এবং আফজাল-সুবর্ণার ছবি ব্যাংকক থেকে প্রসেস করে এনে পোস্টার ও ভিউকার্ড হিসেবে ছাপাতে লাগলেন।

প্রথম দিকে বাধাও এলো। কয়েকটি পত্রিকায় রিপোর্ট হলো আজাদ নামে এক ছেলে পোস্টার-ভিউকার্ড ছাপানোর নামে দেশে অপসংস্কৃতি আমদানি করছে! কিন্তু ব্যাপারটা শাপেবর হয়ে দাঁড়ালো- হু হু করে বিক্রি হতে লাগলো পোস্টার আর ভিউকার্ড। এক সময় এমনভাবে চলতে লাগলো, চাহিদামতো ছাপাতে হিমশিম খাচ্ছিলাম। তারপর ১৯৮২ সালে এসে প্রতিষ্ঠিত হয় আজাদ প্রোডাক্টস। এরপর ডায়রি, দাওয়াতপত্র, বিভিন্ন কার্ড ছাপানো শুরু হয়।

আবুল কালাম আজাদ সফল মায়েদের জন্য চালু করেছেন রত্নগর্ভা মা পুরস্কার। ২০০৩ সাল থেকে তিনি এ পুরস্কার দিয়ে আসছেন। একজন সুসন্তান তৈরিতে মায়ের ভূমিকায় সবচেয়ে বেশি থাকে। মা সচেতন হলে সন্তান যোগ্য হবে এটাই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে মাকে তার প্রাপ্য মূল্য এবং তার কর্মের স্বীকৃতি দেয়ায় এর মূল লক্ষ্য।

আবুু কালাম আজাদকে বিডিফিনান্সিয়ালনিউজ এর পক্ষ থেকে জন্মদিন এর শুভেচ্ছা।

BBS cable ad

জন্মদিন এর আরও খবর: