South east bank ad

স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে করোনার বছরে দেশে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু সাড়ে ২২ ভাগ বেড়েছে

 প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   জনদুর্ভোগ

স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে করোনার বছরে অর্থাৎ ২০২০ সালে দেশে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু সাড়ে ২২ ভাগ বেড়েছে। ব্রেইন ক্যানসারে মৃত্যু বেড়েছে ৪৮ ভাগ, ব্রেইন স্ট্রোকে মৃত্যু বেড়েছে প্রায় ৮৮ শতাংশ। কিডনি রোগে মৃত্যুহার দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। আত্মহত্যাও বেড়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপে এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুর তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার আগারগাঁস্থ বিবিএস ভবনে ‘মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিক্স’ শিরোনামে পরিচালিত জরিপের তথ্য প্রকাশ করা হয়। এতে বিভিন্ন রোগব্যাধী, দুর্ঘটনাসহ নানা কারণে মৃত্যুর তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী জরিপের বিভিন্ন দিক সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, সারা বছরব্যাপী দেশের ২ হাজার নমুনা এলাকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জরিপটি করা হয়েছে। জন্ম-মৃত্যুসহ আর্থসামাজিক অবস্থা জানতে প্রতি বছর এ জরিপটি করা হয়। নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে এর ফলাফলগুলো কাজে লাগবে বলে তিনি মনে করেন। অপুষ্টি, ডেঙ্গু, পোলিও, ডিপথেরিয়া, জলাতঙ্কসহ নানা কারণে মানুষের মৃত্যু কমে আসলেও হার্ট অ্যাটাকসহ বিভিন্ন কারণে মৃত্যুহার বেড়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশে ২০১৯ সালে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেছিল ১ লাখ ৪৭ হাজার ২৫৯ জন। ২০২০ সালে এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার ৪০৮ জন। ব্রেইন স্ট্রোকে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪৫ হাজার ৫০২ জন, ২০২০ সালে এটি বেড়ে হয়েছে ৮৫ হাজার ৩৬০ জনের। ব্লাড ক্যানসারে মৃত্যুর সংখ্যা ১৮ হাজার ৬২০ থেকে এক বছরের ব্যবধানে বেড়ে হয়েছে ২১ হাজার ৪৭১ জনে।

ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত এক বছরে করোনায় মারা গেছেন ৮ হাজার ২৪৮ জন। সে হিসেবে করোনার চেয়ে হার্ট অ্যাটাক বা ক্যানসারে মৃত্যু অনেক বেশি লক্ষ্য করা গেছে। কিডনি রোগে ২০১৯ সালে ১০ হাজার ৬০০ মানুষ মারা গেলেও ২০২০ সালে মারা গেছে ২৮ হাজার মানুষ। লিভার ক্যানসারে মৃত্যু ২১ হাজার ৩০০ থেকে বেড়ে ২৯ হাজার ৮৫০ হয়েছে। করোনার সময়ে আত্মহত্যাও বেড়েছে। ২০১৯ সালে দেশে ৯ হাজার ৩১০ জন আত্মহত্যা করেছিল। করোনার বছরে আত্মহত্যা করেছে ১১ হাজার ২৫৯ জন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৯ সালে দেশে ডায়বেটিকসে মারা গেছেন ২২ হাজার ৩০ জন। ২০২০ সালে এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৫ হাজার। পানিতে ডুবে আগের বছর মারা গেছে ৭ হাজার ২১২ জন, ২০২০ সালে মারা গেছে ১০ হাজার ৪৭৪ জন। ২০২০ সালে নাক-কান-গলার অসুখে মারা গেছে ২ হাজার ৮৮০ জন যা আগের বছরের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। তবে হার্টের অসুখ ও উচ্চ রক্তচাপে মৃত্যুর সংখ্যা একবছরের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে।

তাছাড়া চিকনগুনিয়া, ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার অর্ধেকের বেশি কমেছে। জন্ডিসে মৃত্যুর হার দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৯ সালে জন্ডিসে ৫ হাজার ৫০৭ জন মারা গেলেও ২০২০ সালে মারা গেছে ১০ হাজার ৯৯৭ জন। প্রতিবেদন অনুযায়ী করোনার বছরে মাদক গ্রহণের ফলে মৃত্যুর হারও বেড়েছে। ২০২০ সালে খুন হয়েছেন ১৮৩৩ জন। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১২৩০৬ জন। চর্মরোগে মৃত্যু ১৩১ থেকে বেড়ে ১৫৭১ হয়েছে। নারীদের জরায়ুর ক্যানসারে মৃত্যু দ্বিগুণ বেড়ে ৪ হাজার ৩২০ হয়েছে।

বিবিএসের হিসাবে দেশে ২০১৯ সালে বিভিন্ন কারণে মৃত্যুবরণ করেছে ৮ লাখ ২২ হাজার ৮৪১ জন। ২০২০ সালে মৃত্যুবরণ করেছে সাড়ে ৮ লাখের বেশি। বিবিএস বলছে, এইচআইভি বা এইডসে আক্রান্ত হয়ে গত দুই বছরে দেশে একজনেরও মৃত্যু হয়নি।

BBS cable ad

জনদুর্ভোগ এর আরও খবর: