South east bank ad

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব, হাসপাতালে কাঙ্খিত চিকিৎসা পাচ্ছে না রোগীরা

 প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   জনদুর্ভোগ

কায়সার সামির (মুন্সিগঞ্জ):

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে জেলার দূর-দূরান্ত থেকে আশা রোগীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে চিকিৎসা সেবা হচ্ছে ব্যাহত। হাসপাতালে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও মিলছে না বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দেখা। ফলে দূর থেকে আসা রোগীরা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে। কেউ বা আবার বেশি টাকা দিয়ে অন্যত্র চিকিৎসা নিচ্ছে।

জানা যায়, মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব। ৫০ শয্যার জনবলে চলে ১০০ শয্যার এই হাসপাতাল। যে সকল ডাক্তার রয়েছে, তাদের অধিকাংশই প্রতিদিন সময় মতো উপস্থিত থাকে না। নির্দিষ্ট সময়ের দু’তিন ঘন্টা পর তাদের উপস্থিতি দেখা গেলেও বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি ও প্রাইভেট রোগীদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে হয়ে পড়েন। ফলে রোগীরা দীর্ঘ সময় চিকিৎসকের চেম্বারের বাহিরে অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকেন। এ হাসপাতালে চিকিৎসকের চেম্বারের বাহিরে রোগীদের বসার জন্য নেই কোনো ব্যবস্থা। এতে অনেক অসুস্থ রোগীকে মেঝেতে বসে থাকতে দেখা গেছে।

এদিকে রোগীরা জানান, চিকিৎসকের সাক্ষাত পেলেও দাঁড়িয়ে থেকেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। কারণ হিসেবে ডাক্তারের ব্যক্তিগত সহকারি ও বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল সদস্য বসে থাকেন। রোগীদের ভালো মন্দ না দেখে দুটি কথার ভিত্তিতে চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে চিকিৎসকরা। বাহিরে আসলে রোগীদের পড়তে হয় আরো বেশি বিপাকে। শহরের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানা হেচড়া শুরু করে। পরে বাধ্য হয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার গিয়ে চিকিৎসক কর্তৃক পরীক্ষাগুলো করতে হচ্ছে।

এদিকে অধিকাংশ পরীক্ষা হাসপাতালে হলেও চিকিৎসকরা কথিত দালাল সদস্যের মাধ্যমে রোগীদে ডায়াগনস্টিক সেন্টার পাঠাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অন্যদিকে এ হাসপাতালে রোগীদের জন্য নেই স্বাস্থ্য সম্মত শৌচাগার। যেগুলো আছে তার অধিকাংশই নোংরা। রয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। পুরনো ও নষ্ট পাখা দিয়ে চলছে চারটি ওয়ার্ড। পর্যাপ্ত ভালো পাখা না থাকায় এই প্রচুন্ড গরমে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছে রোগীরা। বেডসিটগুলো রক্ত মাখা ও অনেকটাই পুরনো। হাসপাতালে ঔষধ সমস্যাও দীর্ঘদিনের। যা আছে তাও লিখছেন না। চিকিৎসকরা কমিশনের আসায় রোগীদের ব্যাবস্থাপত্রে লিখছে নতুন প্রতিষ্ঠত কোম্পানির ঔষধ। এছাড়া প্রতিদিন হাপাতালে চুরির ঘটনা ঘটছে। এ ঘটনা জানাজানি হলে কয়েকদিন পুলিশও ছিলো। তাছাড়া এই হাসাপাতে নেই আধুনিক চিকিৎসা সামগ্রী। পুরনো জিনিষ দিয়ে দিয়ে চলছে ১০০ শয্যার হাসপাতাল।

এই প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল পরিচালনা করারার জন্য যে পরিমাণ জনবল প্রয়োজন, তা এই হাসপাতালে নেই। সুতরাং হাসপাতালটি পরিচালনা করতে একটু সমস্যা হচ্ছে। তার পরেও ভালো কিছু করার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি দালালদের কথা স্বীকার করে আরো বলেছেন, দালালদের হাসপাতাল থেকে উচ্ছেদ করার জন্য পুলিশও রেখেছিলাম। কিন্তু তারা সকলেই বোরকা পরে থাকে, তাই তাদের ধরা বা চিহ্নিত করা কষ্টসাধ্য। সুতরাং রোগীরা যেন হাসপাতালে এসে তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা পায়, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আগের চেয়েও হাসপাতালের অবস্থা অনেকটাই উন্নতির পথে।

BBS cable ad

জনদুর্ভোগ এর আরও খবর: