করোনায় ঠাকুরগাঁওয়ে ওষুধের কৃত্রিম সংকট, মিলছেনা প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ
ফরিদুল ইসলাম রঞ্জু (ঠাকুরগাঁও) : দেশের উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও। এখানে দিন দিন বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা । শহর জুরে করোনা শনাক্ত হচ্ছে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশেরও বেশি। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতাল গুলোতে বেড়েই চলেছে রোগীর চাপ, সে সাথে বাড়ছে প্রয়োজনীয় ওষুধের চাহিদাও।
করোনায় আক্রান্ত রোগীর পাশাপাশি সাধারন রোগীর চাহিদা অনুযায়ী নাপা, নাপা এক্সট্রা, এইচ প্লাস, নাপা সিরাপ ও জিংক টেবলেট সহ প্যারাসিটামল জাতীয় কয়েকটি ওষুধ কম্পানির ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে জেলার ওষুধের দোকান ও ফার্মেসি গুলোতে।
চাহিদাপত্র নিয়ে দোকানে দোকানে ঘুরেও ওষুধ না পেয়ে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগী ও স্বজনরা। চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ না পেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা। অপরদিকে ব্যবসায়ীরা তাকিয়ে রয়েছেন ওষুধ কম্পানির এজেন্টদের দিকে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সারা দেশের ন্যায় ঠাকুরগাঁওয়ের করোনা পরিস্থিতির বেশ অবণতি হয়েছে। সেই সাথে বর্ষায় ভাইরাস জনিত ঠান্ডা, কাশি, জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে ওষুধের দোকান গুলিতে। কিছু ফার্মেসীতে এই ঔষধ পাওয়া গেলেও দ্বিগুন দাম নিচ্ছেন আবার কেউ দাম বেশি পাবার আশায় কৃত্রিম সংকট তৈরী করছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
পাঁচ বছরের ছেলের জ্বরের জন্য ওষুধ নিতে এসে না পেয়ে হতাশায় বাড়ি ফিরেন শহরের মইনুল ইসলাম। তার মতই প্রয়োজনীয় জ্বর সর্দির ওষুধ না পেয়ে দোকানের এক কোনায় চুপ করে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায় মাজেদুর নামের আরেক রোগীর স্বজনকে।
এ বিষয়ে ফার্মেসীর মালিকরা জানায়, আমাদের চাহিদার তুলনায় কোম্পানীগুলো আমাদের ঔষধ সরবরাহ করতে পারছে না। বিশেষ করে নাপা ট্যাবলেট, নাপা সিরাপ, এইচ ট্যাবলেট ও এইচ সিরাপ এর চাহিদা অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় কয়েকগুন বেড়ে গেছে। গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ’প্যারাসিটামল’ গ্রুপের ঔষধ প্রথম সারির প্রায় সকল কোম্পানী সরবরাহ করছে না। ফলে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
জেলার নব নিযুক্ক জেলা প্রশাসক মো: মাহবুবুর রহমান জানান, কৃত্রিম সংকট তৈরী করতে নির্ধারিত দামের চেয়ে অর্থাৎ এমআরপি’র বাইরে ঔষধ বিক্রি করা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইনে দন্ডনীয় অপরাধ। আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে ঔষধের দোকানগুলোতে গোপনে তদারকি করবো। কোন ফার্মেসীতে এই ঔষধগুলোর কৃত্রিম সংকট তৈরী করলে এবং বেশি দামে বিক্রির প্রমাণ পেলে তাদেরও লাইসেন্স বাতিল সহ তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।