মোরায় ক্ষতিগ্রস্ত ২ লাখ ৮৬ হাজার মানুষ

ঘূর্ণিঝড় মোরায় দেশের উপকূলীয় ১৬ জেলার ২ লাখ ৮৬ হাজার মানুষ ক্ষতির শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
ঝড়ের বিপদ কেটে যাওয়ার পরদিন বুধবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষয়ক্ষতির এই চিত্র তুলে ধরেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিবের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা।
ঘণ্টায় একশ কিলোমিটারের বেশি গতির বাতাস নিয়ে মঙ্গলবার ভোরে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানে প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোরা। এরপর প্রায় ছয় ঘণ্টা উপকূলীয় এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে দুর্বল হয়ে সেটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়।
গোলাম মোস্তফা জানান, ঘূর্ণিঝড়ে মোট ছয়জনের মৃত্যুর খবর তারা পেয়েছেন। এর মধ্যে কক্সবাজারে চারজন এবং রাঙামাটিতে দুই জন।
নিহত সবার পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনে আরও সহায়তা দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন অতিরিক্ত সচিব।
ভোলার মনপুরা উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় মায়ের কোলে থাকা এক বছর বয়সী এক অসুস্থ শিশুর মৃত্যুর খবর সংবাদমাধ্যমে এলেও সে বিষয়ে কোনো তথ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া হয়নি।
অতিরিক্ত সচিব জানান, ঝড়ের সময় ৬১ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬০ জনই কক্সবাজারের; আর একজন রাঙামাটির বাসিন্দা।
ক্ষয়ক্ষতি
>> কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, বরগুনা, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও রাঙামাটির ৩১ উপজেলার ১০৬টি ইউনিয়ন ঘূর্ণিঝড় মোরায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
>> এসব এলাকার ৫৪ হাজার ৪৮৯টি পরিবারের ২ লাখ ৮৬ হাজার ২৪৫ জন মানুষ ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
>> ১৯ হাজার ৯২৯টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৩৯ হাজার ৫৯৯টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
>> ক্ষতি হয়েছে এক হাজার ৫৯২ একর জমির পানের বরজের।
অতিরিক্ত সচিব জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরা সোমবার সন্ধ্যায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর চার লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৯ জনকে ১১ হাজার ৮২০টি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
ঝড় কাটার পর দুর্গত ১৬ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য এক হাজার ৭০০ মেট্রিক টন চাল এবং ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া বুধবার কক্সবাজার জেলার জন্য ৩০০ টন চাল, ৩০০ বান্ডিল ঢেউটিন এবং ঘর নির্মাণের জন্য ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানান গোলাম মোস্তফা।
তিনি বলেন, “জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যেখানে যা দরকার আমরা সাহায্য দেব। ডিসিদের বলা হয়েছে, আরও চাহিদা থাকলে জানাবেন, আমরা বরাদ্দ দেব।”