সিলেটে 'ট্রিপল' মার্ডার, ৫ দিনের রিমান্ডে হিফজুর
এ এস রায়হান (সিলেট):
সিলেটের গোয়াইনঘাটে দুই শিশুসহ মাকে হত্যার ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী হিফজুর রহমানকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। রোববার আদালতের মাধ্যমে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
এর আগে গত শনিবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় হিফজুর রহমানকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, রোববার সকালে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান হিফজুর। এরপর দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়াইনঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দিলীপ কান্ত নাথ।শুনানি শেষে গোয়াইনঘাট আমলি আদালতের বিচারক অঞ্জন কান্তি দাস ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গোয়ানঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমাদের ধারণা হিফজুরই তার স্ত্রী সন্তানদের হত্যা করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই তাকে রিমান্ডে আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার সকালে উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি দক্ষিণ পাড়া গ্রামের বসত ঘর থেকে হিফজুরের স্ত্রী আলিমা বেগম (৩০), তার দুই সন্তান মিজান (১০) এবং তানিশার (৩) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় একই ঘর থেকে হিফুজরকে রক্তমাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে হিফজুর পুলিশি প্রহরায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনায় নিহত নারীর বাবা আয়ুব আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে শনিবার সিলেটের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, নিহত আলিমা বেগম পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে আমরা জেনেছি। ঘাতকের বটির কোপে তার গর্ভে থাকা পাঁচ মাসের সন্তানও মারা গেছে। আমরা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর ভ্রূণহত্যার অভিযোগও আনব।
তিনি বলেন, পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলো সম্পত্তিসংক্রান্ত বিরোধ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত এবং বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এখন পুলিশের সন্দেহের তীর আহত হিফজুরের দিকেই।
পুলিশ আরও সুপার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও হিফজুরের মোবাইল ফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে ওই দিন এ বাড়িতে কোনো বহিরাগত লোক প্রবেশের আলামত পাওয়া যায়নি। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া এবং স্ত্রী ও দুই সন্তানের অসুস্থতা নিয়ে টানাপোড়েনের জেরেই হিফজুর এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, বুধবার সকালে প্রতিবেশিরা হিফজুরের ঘরের সামনে যান। এসময় ভেতর থেকে কান্নার শব্দ শুনে দরজায় ধাক্কা দেন তারা। এসময় দরজার সিটকিনি খোলা ছিলো। পরে ভেতরে প্রবেশ করে খাটের মধ্যে তিন জনের জবাই করা মরদেহ ও হিফজুরকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে লোকজন পুলিশকে খবর দিলে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ লাশগুলো উদ্ধার করেন এবং জখম অবস্থায় হিফজুরকে হাসপাতালে পাঠান।