অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে বালুর ব্যবসা : পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে
কায়সার সামির (মুন্সিগঞ্জ ) :
মুন্সিগঞ্জ শহরের ধলেশ্বরী বেষ্টিত ফরাজিবাড়ি ঘাট থেকে হাটলক্ষীগঞ্জ ও নওয়াগাঁও হয়ে মুক্তারপুর দিয়ে মিরকাদিম বিশাল এলাকা জুড়ে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে বালুর ব্যবসা। স্থানীয় প্রভাব কাজে লাগিয়ে নদীর পাড় ও পরিবেশের বারোটা বাজিয়ে ব্যবসা করছে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা। পথচারী থেকে শুরু করে শিশু ও বিভিন্ন বয়সী মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। স্তূপ করে রাখা বালুতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ ও জনজীবন।
সরেজমিনে গিয়ে ধলেশ্বরী পাড় বেদখল আর ব্যাসায়ীদের স্তূপ করে রাখা ইট-বালু ও কংক্রিটের চিত্র দেখা গেছে। সরকারি জায়গা ও নদী পাড় দখল করে গড়ে উঠেছে প্রায় ৪০টিরও বেশি ইট-বালুর ব্যবসা। তবে অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা বলছে, তাদের নিজস্ব জায়গায় এই ব্যবসা করছে। বালু উত্তোলন ও বিক্রি করার সময় ধূলাবালিতে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের হুমকির মুখে পড়েছে। পথচারী ও গাড়ি যুগে যাত্রীরা নাক মুখ চেপে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছে।
নাজমা বেগম নামের এক গৃহিণী বলেন, ধূলাবালির কারণে প্রত্যেকদিন ৪ থেকে ৫ বার ঘর পরিষ্কার করতে হয়। ঘরের চালে তাকালেই বুঝা যায় ধূলাবালি কি পরিমাণ। কাপড় শুকাতে পারি না ধূলাবালির কারণে।
কথা হয় পঞ্চসার ইউনিয়নের মিরেশ্বারই এলাকার বাসিন্দা মো. আলাউদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, সমস্যাটা শুধু আমার একা নয়, পুরো পঞ্চসারবাসির। এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা খোলা-মেলাভাবে নদীর পাড় ও সরকারি জায়গা দখল করে ইট-বালুর ব্যবসা করে পরিবেশ নষ্ট করেছে। তিনি আরো বলেন, ধূলাবালির ফলে ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ও চর্ম রোগসহ নানান সমস্যায় ভুগছে।
বিনোয়পুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মো. রাসেল (১২) বলেন, এখন স্কুল বন্ধ। প্রতিদিন ধূলাবালি মধ্যেই আমাদের প্রাইভেটে যেতে হয়। এতে শরীরে চুলকানি হয়। প্রতিদিন দু'তিন বার গোছল করতে হয়।
ঢাকা বিভাগীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ) নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বালু ব্যবসায়ীদের কারণেই নদীর পাড় নষ্ট হচ্ছে। গত মাসের ৮ তারিখে সরেজমিনে গিয়ে বালু ব্যবসায়ীদের নাম উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। খুব শিগগির তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।