দেশসেরা জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া

নাগরিকসেবায় দেশের সেরা জেলা প্রশাসক নির্বাচিত হয়েছেন ফরিদপুরের উম্মে সালমা তানজিয়া। ‘সুশাসনে গড়ি সোনার বাংলা’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরে যোগদান করেন তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের বরাত দিয়ে একই দফতর থেকে সিনিয়র সহকারী সচিব মোছা. শিরিন শবনম স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭ পুরস্কার প্রদানের জন্য আইসিটির মাধ্যমে নাগরিকসেবায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়াকে দেশসেরা জেলা প্রশাসক (নাগরিক সেবা) নির্বাচন করা হয়েছে।
এছাড়াও তার যোগদানের ঠিক এক বছরের মাথায় তিনি ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক-২০১৭ হিসেবে স্বীকৃতি পান। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তাকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়েছিল।
তিনি যোগদানের পর থেকে এই এক বছরে প্রশাসনকে জনবান্ধব করার লক্ষ্যে নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেন। জেলা ই-সেবা কেন্দ্র, ইউডিসি, হেল্পডেস্ক, জয়িতা অঙ্গন, ডিজিটাল হাজিরাসহ নানা ধরনের জনসেবামূলক কর্মসূচি চালু ও সেবার মান উন্নয়নসহ সকল ক্ষেত্রে গতি সঞ্চার করেন তিনি।
ছাত্র-ছাত্রীদের আধুনিক ও নৈতিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য তাদের অভিভাবকদের সমন্বয়ে নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেন। ২৫০টির বেশি স্কুল ও কলেজে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম প্রতিষ্ঠা করেছেন।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া জানান, এসডিজি বাস্তবায়নে সরকার ঘোষিত ভিশন-২০২১ ও ভিশন-২০৪১ সফল করার লক্ষ্যে গুণগত জনসেবা ও জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকল নাগরিককে ই-সেবার আওতায় আনার জন্য টিম ফরিদপুর নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
ফরিদপুর জেলার উন্নয়নের স্বার্থে সততা, স্বচ্ছতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাবার প্রত্যয় ব্যক্ত করে জেলা প্রশাসক বলেন, ফরিদপুর জেলার ঐতিহ্যকে ধারণ করে বাংলাদেশের প্রথম সারির জেলায় রূপান্তরের চেষ্টা করব। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সঙ্গে নিয়ে একটি টিম হিসেবে এ কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে ই-নথি কার্যক্রমে ফরিদপুর জেলা সারাদেশের মধ্যে টানা কয়েক মাস প্রথম স্থানে রয়েছে।
উম্মে সালমা তানজিয়া রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৯৮ সালে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে সহকারী কমিশনার হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় যোগদান করেন।
এরপর বিভিন্ন জেলায় সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সিরাজগঞ্জ জেলায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের মার্চে উপ-সচিব হিসেবে পদোন্নতি পান। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এ টু আই) এ কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।